রাজধানীতে গাঁজা পাতার নির্যাস থেকে ব্রাউনিয়া নামের কেক তৈরি করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। যা খেয়ে নিজেদের নেশার জগতে ডুবিয়ে দিচ্ছে ধনবানদের সন্তানরা। গাঁজা পাতার নির্যাস থেকে ভয়ংকর এই কেক বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকায়।
গোয়েন্দারা বলছেন, অনেক দিন ধরে উচ্চবিত্তদের জন্মদিন কিংবা পার্টিতে ব্যবহার হচ্ছে সর্বনাশা এই মাদক। রমরমা এই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চবিত্তদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই মাদক ব্যবহার করা হলেও আটকের ঘটনা এটিই প্রথম।
গাঁজা পাতার নির্যাস থেকে তৈরি এই কেক নেশাগ্রস্থরা ‘ব্রাউনি’ বলে ডাকে। গাঁজার পাতাকে সিদ্ধ করে তৈরি করা হয় এক ধরণের তেল। সেই তেল দিয়ে কৌশলে বানানো হয় নেশার কেক ‘ব্রাউনি’। সাংকেতিক নাম ব্যবহার করে অনলাইনে চলছে এর কেনা-বেচা। যার প্রধান ক্রেতা ধনীর দুলাল-দুলালীরা।
সম্প্রতি ভয়ঙ্কর মাদক আইস ও এলএসডিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপরই বেরিয়ে আসে গাঁজার তৈরি নতুন মাদকের তথ্য। পরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ব্রাউনি উদ্ধার করে পুলিশ। এবং দুজকে আটক করে। আটককৃত দু’জনই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান।
রমনা বিভাগের (গোয়েন্দা) উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিজুল হক বলেন, যাদের আমরা ধরেছি তারা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের রান্নাঘরে এটা তৈরি হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দামি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানালাম, একেকটা ব্রাউনি তিন হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ঢাকা মহানগরীতে যে পার্টি কালচার শুরু হয়েছে এতে এই ব্রাউনি জনপ্রিয় একটি মাদক।
গাঁজার তেল দিয়ে মাদকটি দেশেই তৈরি করা হয় জানিয়ে পুলিশ বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা গ্রুপে সাংকেতিক নামে বিক্রি করা এই মাদকের মূল ক্রেতা, ধনী পরিবারের তরুণ-তরুণীরা।
এইচ এম আজিজুল হক বলেন, অনেকটা এলএসডি’র মতোই। ইন্টারনেট নির্ভর তাদের গ্রুপ আছে। এইসব গ্রুপে যোগাযোগের মাধ্যমে এটার কেনা-বেচা হয়। কেউ আছে তৈরি করে, কেউ সেগুলো কেনে। লেখাপড়া করা ছেলেরা এটার সংগে জড়িত।
শুধু গাঁজার কেক নয়, অনলাইনে সু-কৌশলে বিক্রি হচ্ছে আইস ও এলএসডি’র মত ভয়ংকর মাদকও। গোয়েন্দারা বলছেন, এসব মাদক কারবারিকে ধরতে অব্যাহত রয়েছে অভিযান, নজরদারিতে রাখা হয়েছে অনলাইন মাদক হোতাদের।